গত ৮ আগস্ট সিদ্ধেশ্বরী কলেজে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষায় পরিদর্শকদের জন্য জনপ্রতি দেড় হাজার টাকা করে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এই টাকার একটি অংশ আত্মসাৎ করার জন্য এক অবিশ্বাস্য জালিয়াতি করে। তারা এমন শিক্ষকদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে, যারা সেদিন ডিউটিতে ছিলেনই না। তালিকায় ছিল অবসরে যাওয়া নাতাশা সরকার ও সাবিনা মিতার মতো শিক্ষকদের নাম। এছাড়াও বিদেশে অবস্থানরত সামন্তি মৃধা ও রাজিয়া হোসেন তিথির নামও ছিল।
শিক্ষকদের নিজেদের বক্তব্যেই এই দুর্নীতির চিত্র স্পষ্ট হয়েছে। ইংরেজি বিভাগের প্রধান একেএম গিয়াসউদ্দিন জানান, তার বিভাগের তিন জন শিক্ষিকা ডিউটিতে না থেকেও তাদের নামে বিল করা হয়েছে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলাম এই তালিকাগুলোকে 'ভৌতিক' বলে আখ্যা দেন। কলেজের অধ্যক্ষ শেখ জুলহাস উদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, শিক্ষক প্রতিনিধি রুহুল আমিন খান দাবি করেন, অতীতেও এভাবে টাকা সমন্বয় করা হয়েছে, যা এই অনিয়মের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে।
এই ঘটনাটি যখন শিক্ষকদের মধ্যে প্রকাশ্যে আসে, তখন তাদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা যায়। কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে হাতাহাতিতেও রূপ নেয়। এই ঘটনা শুধু আর্থিক অনিয়ম নয়, বরং এটি শিক্ষক সমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং পারস্পরিক আস্থার অভাবেরও ইঙ্গিত দেয়। যে শিক্ষকরা তরুণ প্রজন্মকে নীতি-নৈতিকতা শেখান, তাদের নিজেদের মধ্যেই এমন দুর্নীতির অভিযোগ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভিতকে দুর্বল করে দিচ্ছে। (সূত্র: সিদ্ধেশ্বরী কলেজের শিক্ষক ও নির্বাচন কমিশন)