রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) যেন এক রণক্ষেত্র! ভর্তি পরীক্ষায় 'পোষ্য কোটা' পুনর্বহালের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশকে মুহূর্তেই উত্তাল করে তুলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার থেকে, যখন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। শনিবার বিকেলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে স্লোগান দেন এবং প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে গাড়ির ওপর টাকা ছুঁড়ে মারেন। এরপর তিনি এবং প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান নিজেদের বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাদের পথ আটকে দেন এবং মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এই উত্তেজনা আরও বাড়ে যখন উপ-উপাচার্য ও একদল শিক্ষক জুবেরী ভবনে প্রবেশ করতে চান। শিক্ষার্থীরা তাদের সামনে স্লোগান দিয়ে অবরোধ করলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী মাটিতে পড়ে যান এবং আহত হন। এমনকি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান তার হাতের ঘড়ি ও সাথে থাকা ১০ হাজার টাকাও হারিয়ে ফেলেন। এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর মনোভাব এবং শিক্ষার্থীদের হতাশার এক করুণ চিত্র তুলে ধরেছে।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই 'পোষ্য কোটা' স্থায়ীভাবে বাতিল করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি অংশের আন্দোলনের মুখে গত বৃহস্পতিবার কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বর্তমানে ক্যাম্পাস জুড়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। (সূত্র: প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন)