জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি। ৫ আগস্টের সহিংসতায় লুট হওয়া অস্ত্র এবং লাগামহীন রাজনৈতিক সহিংসতা তরুণ প্রজন্মের মনে এক গভীর শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব অস্ত্র উদ্ধার না হলে সামনের নির্বাচন আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন অফিসের কর্মব্যস্ততা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে নামা দেখে মনে হচ্ছে, সব কিছু স্বাভাবিক। কিন্তু পর্দার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। গত ৫ আগস্ট দেশের প্রায় ৪০০ থানায় পুলিশের যে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সরঞ্জাম লুট হয়েছিল, তার অধিকাংশই এখন আন্ডারওয়ার্ল্ড এবং রাজনৈতিক ক্যাডারদের হাতে চলে গেছে। এই অস্ত্রগুলো যদি উদ্ধার না হয়, তাহলে আগামী নির্বাচন সহিংস ও রক্তক্ষয়ী হতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই অবনতি নিয়ে স্বয়ং পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে ১১টি খুন এবং অসংখ্য ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এটি দেশের আইনশৃঙ্খলার বর্তমান ভঙ্গুর অবস্থার এক বাস্তব চিত্র। তবে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আশ্বস্ত করেছেন যে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং তারা নির্বাচনের আগেই প্রায় সব অস্ত্র উদ্ধার করতে পারবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক বছরে আইনশৃঙ্খলায় তেমন কোনো দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। টিআইবির তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১২১ জন নিহত হয়েছেন। এই পরিসংখ্যান এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরে, যা তরুণ প্রজন্মকে ভাবিয়ে তুলছে।
নির্বাচনের দিন প্রায় ৮ লাখ নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্বে থাকবেন, যাদের মধ্যে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, কারণ প্রযুক্তিগত নজরদারি অপরাধ দমনে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু এই সব পদক্ষেপ কি হারানো অস্ত্র এবং রাজনৈতিক সহিংসতার সামনে যথেষ্ট? (সূত্র: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ মহাপরিদর্শক, টিআইবি)