কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে ফেলার মতো বর্বরতার পর এবার রক্ত ঝরলো গোয়ালন্দে। নুরাল পাগলার মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে রাসেল মোল্লা (২৮) নামের এক যুবক মারা গেছেন। এই ঘটনা সমাজের মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় এবং ধর্মীয় উন্মত্ততার ভয়ংকর পরিণতিকে তুলে ধরেছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, নিহত রাসেল মোল্লা গোয়ালন্দের ঝুট মিস্ত্রির পাড়ার বাসিন্দা আজাদ মোল্লার ছেলে। এই সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুরো গোয়ালন্দজুড়ে বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই সহিংসতা প্রমাণ করে যে, সমাজে যখন ধর্মের নামে উগ্রতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তখন তা কেবল বিতর্ক বা সংঘাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। আইনের শাসনের অভাবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রাথমিক ব্যর্থতা এই সহিংসতাকে আরও তীব্র করে তোলে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সংঘর্ষে হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে তার এবং ওসির গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি কড়া সতর্কবার্তা। ধর্মীয় উন্মাদনা এবং অন্ধ বিশ্বাসের কারণে একটি সমাজের স্বাভাবিক শৃঙ্খলা কীভাবে ভেঙে যেতে পারে, এটি তারই করুণ উদাহরণ। আইন ও বিচারব্যবস্থার দ্রুত এবং নিরপেক্ষ হস্তক্ষেপ ছাড়া এই ধরনের সংঘাত থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। (সূত্র: গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন, রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার)