কে ভেবেছিল, সিনেমার পর এবার রাজনীতির মঞ্চেও এমন নাটকীয় প্লট দেখা যাবে? আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী অপু বিশ্বাস এবার বিএনপির অনুষ্ঠানে গিয়ে চরম বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। এই দ্বিচারিতা নিয়ে বিনোদন জগতে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। আর এ ঘটনার পরই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি, যিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, "দিদি ৬ মাস আওয়ামী লীগ, ৬ মাস বিএনপি।"
পরীমণির এই ফেসবুক পোস্টটি শুক্রবার রাতে ভাইরাল হয়। যদিও তিনি নির্দিষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ করেননি, তবে তার অনুসারীরা মন্তব্যেই অপু বিশ্বাসের নাম তুলে ধরেন। পরীমণি তার পোস্টে লেখেন, "আগে ছিল ৬ মাস হিন্দু, ৬ মাস মুসলিম। এখন ৬ মাস আওয়ামীলীগ, ৬ মাস বিএনপি। পল্টিবাজ, সুবিধাবাদী কারে বলে দিদি কিন্তু দেখিয়ে দিলেন।" এই বাক্যগুলো দেশের তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং হতাশার এক প্রতিচ্ছবি।
জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে চিত্রনায়ক নিরব হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অপু বিশ্বাস। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে এসেছেন। এমনকি তিনি আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। অথচ হঠাৎ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মঞ্চে তার উপস্থিতি অনেক প্রশ্ন তৈরি করেছে।
এই ঘটনাটি কেবল একজন অভিনেত্রীর রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের বিষয় নয়, বরং এটি আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি বড় দিক তুলে ধরে। রাজনীতিতে আদর্শের চেয়ে সুবিধা ও ব্যক্তিগত লাভ কীভাবে মুখ্য হয়ে ওঠে, এটি তারই একটি উদাহরণ। এটি একটি আইনি ও নৈতিক প্রশ্নও বটে। একজন ব্যক্তি কি এভাবে এক দলের হয়ে সুবিধা নিয়ে অন্য দলের মঞ্চে দাঁড়াতে পারেন? রাজনৈতিক দলগুলো কেন এমন সুবিধাবাদী আচরণকে প্রশ্রয় দেয়?
পরীমণির এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন আলোচনার জন্ম হয়েছে। এই ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি, ক্ষমতার প্রতি লোভ মানুষকে কীভাবে তার আদর্শ এবং নৈতিকতা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। (সূত্র: পরীমণির ফেসবুক পোস্ট, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম)