কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাঞ্চন মালার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছে সাধারণ মানুষ। আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে একত্রিত হয়ে ভুক্তভোগীরা এই দাবি জানান। বিশেষ করে, লুঙ্গি পরা মানুষদের প্রতি তার অবমাননাকর আচরণ এবং অফিসের ভেতরেই তার বিরুদ্ধে কর্মচারীদের মাথা থেকে উকুন তোলার মতো অদ্ভুত অভিযোগ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাঞ্চন মালার কাছে সেবা নিতে গিয়ে প্রায়ই মানুষ অশোভন আচরণের শিকার হন। তাকে প্রায়শই বলতে শোনা যায়, "আমি কি তার পেছনে পেছনে ঘুরে বেড়াই নাকি?"। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো এবং সরকারি হুইলচেয়ার ও সেলাই মেশিন আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিতরণ করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তিনি অফিসের ভেতরে বসেই স্বামীর এনজিও’র প্রচার ও গ্রাহক সংগ্রহ করেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ মুকবল, সজল এবং জহির তাদের বক্তব্যে জানান, এই কর্মকর্তার কারণে সরকারি সেবা নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মুকবল বলেন, "আমরা চাই তার বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন দুর্ব্যবহার করতে না পারে।" সজল আরও বলেন, "মানুষ সেবা নিতে যায়, কিন্তু সেবার পরিবর্তে হয়রানি পায়। আমরা চাই, কুষ্টিয়া থেকে তাকে অপসারণ করে একজন যোগ্য ও জনবান্ধব কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হোক।"

এই ঘটনা কেবল একজন ব্যক্তির দুর্নীতির বিষয় নয়, বরং এটি একটি সিস্টেমের দুর্বলতা এবং সামাজিক বৈষম্যের প্রতিফলন। যখন একজন সরকারি কর্মকর্তা লুঙ্গি পরা সাধারণ মানুষকে অবজ্ঞা করেন, তখন তা সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভিত্তিকেই নাড়িয়ে দেয়। আইনগতভাবে, ক্ষমতার এমন অপব্যবহার এবং সরকারি সম্পদের ব্যক্তিগত ব্যবহার গুরুতর অপরাধ, যা বিভাগীয় তদন্তের পরও "স্বাভাবিক" বলে গণ্য হওয়া হতাশাজনক এবং প্রশ্নবিদ্ধ। ভুক্তভোগীদের মতে, তাদের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হলেও দীর্ঘ ৩ মাসে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। (সূত্র: মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ভুক্তভোগীরা)