ঢাকা | বঙ্গাব্দ

একই প্রেমিকের জন্য দুই জা, চায়ে ঘুমের ওষুধ!

  • প্রকাশের তারিখ : 4-সেপ্টেম্বর-2025 ইং
একই প্রেমিকের জন্য দুই জা, চায়ে ঘুমের ওষুধ! ছবির ক্যাপশন: একই প্রেমিকের জন্য দুই জা, চায়ে ঘুমের ওষুধ!

যেমন সিনেমা, তেমনই বাস্তব! ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার বাগদায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। একই পরিবারের দুই জা, শ্বশুর-শাশুড়ি ও তিন নাবালিকা মেয়েকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে একই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের এই রোমহর্ষক পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়, যখন পুলিশ তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুই গৃহবধূকে আটক করা হলেও তাদের প্রেমিক আরিফ মোল্লা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিখোঁজ হওয়া এই দুই নারীর সন্ধানে তাদের স্বামীরা, ইয়াসিন শেখ ও আনিসুর শেখ, থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তারা দাবি করেন, তাদের স্ত্রীরা স্বেচ্ছায় যাননি, বরং প্রতিবেশী যুবক আরিফ তাদের ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে।

এই ঘটনার সঙ্গে আইনি এবং মনস্তাত্ত্বিক দুই ধরনের জটিলতাই জড়িত। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে, মাদক ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের অচেতন করা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিরাপত্তাহীনতার মুখে ঠেলে দেওয়া একটি গুরুতর অপরাধ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় এই ধরনের বিষপ্রয়াসের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দুই জা, নাজমা বেগমকুলচান, অকপটে স্বীকার করেন যে তারা সবাই একই প্রেমিকের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন। ছোট বউ নাজমা বলেন, “আমরা চায়ে শুধু ঘুমের ওষুধ দিয়েছিলাম, বিষ নয়।” আর বড় জা কুলচান আরও স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা জানতাম বাড়ির লোকজন আমাদের পালাতে দেবে না। তাই আগে থেকেই এই ব্যবস্থা করেছিলাম।” তাদের এই স্বীকারোক্তি থেকে বোঝা যায়, এই দুই নারী একই সময়ে একই পুরুষের প্রেমে পড়েছিলেন, যা সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বিরল ঘটনা।

প্রযুক্তি এই ঘটনায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাকিং-এর মাধ্যমে পুলিশ দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়, যা প্রমাণ করে অপরাধ দমনে প্রযুক্তি কতটা শক্তিশালী একটি হাতিয়ার।

এই ঘটনাটি এলাকার মানুষের মনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বলছেন, এটি সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এক নির্মম দৃষ্টান্ত। এটি একটি দার্শনিক প্রশ্নও বটে—মানুষের পারিবারিক সম্পর্ক কেন এত ঠুনকো হয়ে যাচ্ছে, যেখানে ভালোবাসা আর বিশ্বাস ভেঙে পড়ছে?

(সূত্র: উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র)


ad728
কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য
বেঙ্গল প্রেস ডেস্ক

বেঙ্গল প্রেস ডেস্ক