বিপজ্জনক! রেলপথে যাত্রীদের আতঙ্ক বাড়িয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে লাইনচ্যুত হয়েছে তিতাস কমিউটার ট্রেনের একটি বগি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তালশহর এলাকায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, এই ঘটনা ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী রেলযাত্রীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. নাজমুল হোসেন এই দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাইনচ্যুত বগিটির একটি চাকা লাইনের বাইরে চলে গিয়েছিল। তবে ভাগ্যক্রমে এক লাইনেই আপ-ডাউন ট্রেন চলাচল করছে, যার ফলে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, ট্রেনটিকে পুনরায় উদ্ধার করার জন্য আখাউড়া লোকোশেডে খবর দেওয়া হয়েছে। আধুনিক যুগে এমন যান্ত্রিক ত্রুটি মানুষের জীবনকে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে, এই ঘটনা তারই এক নির্মম উদাহরণ।
এই ধরনের ঘটনা আমাদের দেশের রেল ব্যবস্থার দুর্বলতা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, বারবার এমন দুর্ঘটনা মানুষের মনে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তৈরি করে। এটি কেবল একটি যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, বরং দেশের পরিবহন ব্যবস্থার ব্যবস্থাপনার এক বড় সংকট। মানুষের জীবন যেখানে বিপন্ন, সেখানে প্রযুক্তিগত ত্রুটি কিংবা অবহেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আইন অনুযায়ী, রেল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা। যখন এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা দেখা যায়, তখন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এই ঘটনা প্রমাণ করে, রেলের অবকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার শুধুমাত্র নতুন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি নয়, বরং পুরোনো অবকাঠামোকে আধুনিকায়ন করাও এর অন্তর্ভুক্ত। রেলপথে উন্নত সেন্সর ও ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করলে এমন দুর্ঘটনা সহজেই এড়ানো সম্ভব হতো।
(সূত্র: ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ও রেল কর্তৃপক্ষ)