ঢাকা | বঙ্গাব্দ

প্রক্টরকে লাল রং! চবিতে ৭ দফা দাবিতে মশাল মিছিল!

  • প্রকাশের তারিখ : 4-সেপ্টেম্বর-2025 ইং
প্রক্টরকে লাল রং! চবিতে ৭ দফা দাবিতে মশাল মিছিল! ছবির ক্যাপশন: প্রক্টরকে লাল রং! চবিতে ৭ দফা দাবিতে মশাল মিছিল!

চবির সবুজ ক্যাম্পাসে বইছে প্রতিবাদের আগুন! শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ন্যায্য বিচার এবং নিরাপত্তার দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করেন। তাদের দাবি না মানলে সন্ধ্যায় ‘মশাল মিছিল’ এবং প্রক্টর অফিসে ‘লাল রঙ নিক্ষেপ’ করার মতো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মুখে শোনা যায় আবেগপূর্ণ স্লোগান: ‘১, ২, ৩, ৪ প্রক্টর তুই গদি ছাড়’, ‘যে প্রক্টর আমাদের না, সে প্রক্টর মানি না’, ‘আমার ভাই আইসিইউতে, প্রশাসন নিয়োগ বোর্ডে’। এই স্লোগানগুলো শুধু কয়েকটি বাক্য নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের চাপা ক্ষোভ ও হতাশার এক বিস্ফোরক বহিঃপ্রকাশ। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই স্লোগানগুলো আমাদের ভাবিয়ে তোলে: প্রশাসনের মূল দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কিন্তু কেন তারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে?

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জসদ জাকির বলেন, “আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ ও তাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগসহ মোট সাতটি দাবি নিয়ে আমাদের এই আন্দোলন। প্রশাসন পরিস্থিতির দায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “প্রশাসন এখনও আহত শিক্ষার্থীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আমরা চাই প্রক্টর নিজে তার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করুক।”

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, “প্রক্টরিয়াল বডি গত কয়েক মাসে নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। গুপ্ত হামলা থেকে প্রকাশ্যে হামলা—সবখানেই তারা নিষ্ক্রিয় ছিল।” তার কথায় স্পষ্ট, এই আন্দোলন কেবল একটি ঘটনার প্রতিবাদ নয়, বরং দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত হতাশার বহিঃপ্রকাশ। এই ধরনের ব্যর্থতা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকেই অনিরাপদ করে তোলে না, বরং তরুণ শিক্ষার্থীদের মনে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি এক গভীর অনাস্থা সৃষ্টি করে।

নারী অঙ্গনের সংগঠক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, “আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যতবারই আমরা নিরাপত্তা চেয়েছি, তারা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।” তার এই উক্তিটি আমাদের সমাজের এক নির্মম বাস্তবতাকে তুলে ধরে। প্রতিটি মানুষেরই নিরাপদ থাকার অধিকার রয়েছে, যা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। আমাদের সংবিধানও প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলে, কিন্তু আইন যখন সঠিকভাবে প্রয়োগ হয় না, তখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

আন্দোলনকারীরা তাদের সাতটি দাবির একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে: আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ, মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসন ব্যবস্থা, অপরাধীদের বিচার, উভয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিটি গঠন, এবং প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ। যদি তাদের দাবি না মানা হয়, তবে আজকের মধ্যেই তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। (সূত্র: বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা)


ad728
কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য
বেঙ্গল প্রেস ডেস্ক

বেঙ্গল প্রেস ডেস্ক