দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অভূতপূর্ব চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পুলিশ সদর দপ্তরে আবেদন করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্লট দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই আবেদনটি একটি চিঠির মাধ্যমে প্রেরণ করেন।
এই খবরটি দ্রুতই মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ এটি শুধুমাত্র একটি আইনি পদক্ষেপ নয়, বরং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ও নৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির আবেদন একটি বিরল ঘটনা।
দুদকের এই আবেদনটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা তিনটি পৃথক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এই মামলাগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অভিযুক্ত। আজ ছিল এই মামলাগুলোর তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ। এই আইনি প্রক্রিয়াগুলো আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা কতটা, সে প্রশ্ন তুলে ধরে। আইন কী সবার জন্য সমান? এই প্রশ্নটি এখন দেশের তরুণ প্রজন্মের মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আইনের ছাত্র হিসেবে আমি মনে করি, দুদক একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করছে। একটি রাষ্ট্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কাজ হচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহার বা দুর্নীতি রোধ করা, সে যেই হোক না কেন। এই আইনি প্রক্রিয়া প্রমাণ করে, বিচার ব্যবস্থা এখনও সচল আছে এবং এটি দেশের সাধারণ মানুষের জন্য আশার আলো।
এই ঘটনা কেবল একটি আইনি প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি দার্শনিক প্রশ্নও বটে। ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরা যদি দেশের প্রচলিত আইনকে সম্মান না করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কার উপর আস্থা রাখবে? এই ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা কতটা অপরিহার্য। এটি প্রযুক্তির সহায়তায় আরো দ্রুত এবং স্বচ্ছ করা সম্ভব।
(সূত্র: দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সদর দপ্তর)