১৮তম ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিয়াড অন অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে (IOAA) বাংলাদেশ দলের বিজয় বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের জন্য এক নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে। ৬০টিরও বেশি দেশের প্রায় ২৯০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে আমাদের তরুণ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু এই সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অপ্রিয় সত্য: টেলিস্কোপের অভাবে একটি নিশ্চিত পদক হাতছাড়া হয়েছে।
সাফল্যের ঝলক, কিন্তু দুর্বলতা কোথায়?
এবারের প্রতিযোগিতার থিওরি রাউন্ড গত বছরের চেয়েও কঠিন ছিল, এর মধ্যেও প্রত্যেক বাংলাদেশি প্রতিযোগী অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। কিন্তু দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ধরা পড়েছে টেলিস্কোপ রাউন্ডে। দলের একজন সদস্য টেলিস্কোপের অভাবে ব্রোঞ্জ পদক থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রাক্তন IOAA প্রতিযোগী এবং বর্তমানে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফাহিম রাজিত হোসেন এবং অর্ণব চৌধুরী। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই এমন ফল সম্ভব হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যখন আমাদের তরুণরা বিশ্বমানের মেধা নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন কেন তারা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে পিছিয়ে পড়বে?
সামনের পথ: 'আরও ভালো ভবিষ্যতের স্বপ্ন'
২০২৬ সালে ১৯তম IOAA অনুষ্ঠিত হবে ভিয়েতনামে। বাংলাদেশের জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড অ্যাসোসিয়েশন (BDOAA) বর্তমানে IOAA উপযোগী টেলিস্কোপ কেনার চেষ্টা করছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আমাদের তরুণরা এই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠবে।
এটি শুধু একটি পদক হারানোর বিষয় নয়, এটি আমাদের দেশের বিজ্ঞানচর্চার অবকাঠামোগত দুর্বলতার এক করুণ চিত্র। যখন আমাদের তরুণরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের প্রমাণ করতে চাইছে, তখন রাষ্ট্রের এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কি তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত নয়?
প্রশ্ন হলো, একটি দেশ যখন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে, তখন কি তার তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিশ্চিত করা একটি মৌলিক দায়িত্ব নয়?