১৮ বছরের এই তরুণ কি তার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের বিচার পাবে?
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার এবং মেহেরুন রুনি তাদের নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে খুন হন। সেদিন থেকে প্রায় এক যুগ পার হয়ে গেছে, কিন্তু আজও এই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। তাদের একমাত্র সন্তান, মাহির সরোয়ার মেঘ, যিনি মাত্র ৫ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন, এখন একজন ১৮ বছরের তরুণ। মেঘের বুকের মধ্যে জমাট বরফের মতো জমে আছে বিচারহীনতার যন্ত্রণা, যা প্রতিনিয়ত আরও কঠিন হচ্ছে।
প্রশ্ন করতে ভুলে গেছে মেঘ: ‘আর কবে?’ ‘আর কতদিন?’
বাবা-মায়ের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে মেঘ বেড়ে উঠেছে পিতামাতার স্নেহ ছাড়া। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেও সে কোনো বিচার পায়নি। বিচারহীনতার এই দীর্ঘ পথচলায় মেঘ আজ প্রশ্ন করতে ভুলে গেছে: 'আর কবে?' 'আর কতদিন?' তার নীরবতা যেন পুরো বিচার ব্যবস্থার প্রতি এক নীরব অভিযোগ।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল আসেনি। তদন্তের দায়িত্ব একের পর এক সংস্থা পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু রহস্যের জট খোলেনি। এই বিচারহীনতা শুধু সাগর-রুনির পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের সাংবাদিক সমাজ এবং সাধারণ মানুষের জন্য এক চরম হতাশার কারণ।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি: একটি রাষ্ট্রের কলঙ্ক
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড কেবল একটি অপরাধ নয়, এটি আমাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থার প্রতীক। যখন একজন শিশু তার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার চাইতে গিয়েও ব্যর্থ হয়, তখন তা কেবল একটি পরিবারের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি থাকে না, বরং তা রাষ্ট্রের বিচারহীনতার সংস্কৃতির এক কদর্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া দেশের সাংবাদিকতার স্বাধীনতার জন্যও এক অশনি সংকেত।
প্রশ্ন হলো, রাষ্ট্র কি তার প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে? সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার কি কোনোদিন হবে, নাকি এটিও বাংলাদেশের বিচারহীনতার কালো অধ্যায়ের অংশ হয়ে থাকবে?