বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান বাড়াতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য নতুন কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় প্রথমবারের মতো ছাগল পালনের জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়ার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এটি কি কেবল একটি নতুন ঋণ সুবিধা, নাকি দেশের লাখ লাখ বেকার যুবক-যুবতীর জন্য স্বাবলম্বী হওয়ার এক নতুন পথের সূচনা?
ছাগল পালন: ছোট ব্যবসা, বড় স্বপ্ন
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, একজন কৃষক বা খামারি সর্বোচ্চ ৫০টি ছাগল পালনের জন্য এই ঋণ নিতে পারবেন। মজার বিষয় হলো, ছাগল পালনের জন্য খামার তৈরিতে ঘর নির্মাণের খরচও এই ঋণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য একটি বড় সুবিধা, কারণ এটি তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগের বোঝা অনেকাংশে কমিয়ে দেবে।
তবে, ৫০টির বেশি ছাগল পালনের জন্য নেওয়া ঋণ কৃষিঋণ হিসেবে গণ্য হবে না। এই নিয়মটি হয়তো বড় খামারিদের নিরুৎসাহিত করতে পারে, কিন্তু এটি ছোট ও প্রান্তিক খামারিদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
কৃষি ঋণে শীর্ষে বাংলাদেশ, এবার কি ছাগলও?
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের চেয়ে এক হাজার কোটি টাকা বেশি। বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য কৃষিখাতকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাগল পালনে ঋণ সুবিধা প্রদান একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষি উৎপাদন ও ঋণ বিতরণে শীর্ষে রয়েছে। এই নতুন নীতিমালা গ্রামীণ অর্থনীতিতে এক নতুন গতি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, নারী ও প্রান্তিক খামারিদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা গ্রামীণ সমাজে নারীর ক্ষমতায়নকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
প্রশ্ন হলো, এই ১০ লাখ টাকার ঋণ কি কেবল কিছু মানুষের হাতে পৌঁছাবে, নাকি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা বেকার যুবকরা এর সুবিধা নিয়ে সত্যিই নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবে?