মেহেরপুর, ১৮ আগস্ট ২০২৫: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মেহেরপুর-১ (সদর ও মুজিবনগর) আসনের রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই চলছে গণসংযোগ, মিছিল, মিটিং এবং উঠান বৈঠক। এই আসনে প্রধান দলগুলোর একাধিক নেতা যেমন ভোটের মাঠে সক্রিয়, তেমনি জোটের মধ্যে ও নিজ দলের ভেতরেই শুরু হয়েছে টানাপোড়েন।

বিএনপির ঘরেই কি বিদ্রোহের আগুন?

এ আসনে বিএনপির অন্তত চারজন প্রভাবশালী নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী। এদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ, এবং মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম।

সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান এবং সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ। মাসুদ অরুণ প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলেছেন, বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। তিনি কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে মিছিল ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান এই অভিযোগকে পাশ কাটিয়ে বলছেন, "বিএনপি একটি বড় দল। এখানে মনোনয়নের প্রতিযোগিতা থাকবেই।"

এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল কি শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে? নাকি নির্বাচনের আগে তারা এক ছাতার নিচে আসতে পারবে?

জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নীরব প্রচারণা

অন্যদিকে, এই আসনে জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা তাজউদ্দিন আহম্মেদ-এর নাম আগেই ঘোষণা করেছে। তিনি নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন এবং নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা উপহার বিতরণ করছেন। জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন জানান, "কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।"

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী প্রভাষক খাদেমুল ইসলাম-ও মাঠে সক্রিয়। দলটি দাবি করছে, তারা নীরবে কাজ করে যাচ্ছে।

তবে এই আসনে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং গণঅধিকার পরিষদ-এর তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তাদের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও এলাকায় নেই।

প্রশ্ন হলো, মেহেরপুরের এই রাজনৈতিক উত্তাপ কি নির্বাচনের দিন পর্যন্ত বজায় থাকবে? নাকি শেষ মুহূর্তে জোটের সমীকরণ পাল্টে যাবে এবং নতুন কোনো চমক অপেক্ষা করছে?