বাংলা কথাসাহিত্যের এক স্বতন্ত্র ধারার স্রষ্টা, 'বাউল স্বভাবি' বুলবুল চৌধুরীর জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের এই দিনে গাজীপুরের ভাওয়াল অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার প্রয়াণের পর আজ তার প্রথম জন্মদিন, কিন্তু তার সৃষ্টিকর্ম এবং প্রাঞ্জল গদ্যভাষা আজও বাংলা সাহিত্যের ভুবনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
'টুকা কাহিনী': প্রান্তিক জীবনের এক নতুন দলিল
বুলবুল চৌধুরীর সাহিত্যযাত্রা শুরু হয়েছিল ছাত্রাবস্থায়ই। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত 'জোনাকী ও সন্নিকট কেন্দ্র' গল্পটি তাকে প্রথম আলোচনায় আনে। তবে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় 'টুকা কাহিনী' গল্পগ্রন্থটি। এই গল্পগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রান্তিক মানুষের জীবনযাপনের ছোট ছোট গল্পগুলোকে এমন এক শৈলীতে তুলে ধরেছিলেন, যা বাংলা সাহিত্যের জন্য ছিল একেবারেই নতুন। তার গদ্যে গ্রামীণ জীবনের অভিজ্ঞতা আর মানবমনের গভীরতম টানাপোড়েন এক অদ্ভুত জাদুতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠতো।
সাংবাদিকতা থেকে একুশে পদক: এক সৃজনশীল জীবনের গল্প
সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি বুলবুল চৌধুরী দীর্ঘদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। তার সৃজনশীলতা এবং প্রাঞ্জল লেখার দক্ষতা তাকে সাংবাদিকতা জগতেও সফল করে তুলেছিল। তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, এবং ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার সহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন।
এই গুণী লেখক ২০২১ সালের ২৮ আগস্ট পরলোকগমন করলেও, তার সাহিত্য আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবে। তার জন্মদিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সাহিত্য কেবল বিনোদন নয়, এটি আমাদের শেকড়, আমাদের ইতিহাস এবং আমাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি।
প্রশ্ন একটাই, বুলবুল চৌধুরীর কোন বইটি আপনার মন ছুঁয়েছে? কমেন্টে জানান সেই বইটির নাম।